বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে যদি নির্বাচন বিলম্বিত হয়, তাহলে ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি হবে। পতিত ফ্যাসিবাদ সুযোগ পাবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নির্বাচন বানচাল হলে অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান হবে বলেও তিনি সতর্ক করেন।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীতে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেমিনার হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (এনডিপি) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, পিআর মানে পার্মানেন্ট রেস্টলেসনেস। এ ব্যবস্থায় স্থিতিশীল সরকার ব্যবস্থা থাকে না। কয়েক মাস পরপর প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হয়, সরকার পরিবর্তন হয়। এতে কোনো দল জনগণের কাছে দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে পারে না, দেশের উন্নয়নও হয় না। বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রকে আমরা এমন অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিতে পারি না।
তিনি অভিযোগ করেন বলেন যারা পিআর-পিআর করছে, তাদের সঙ্গে থাকা দলের অনেকে ‘আমি-ডামি’ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। তারা আওয়ামী লীগের সব কর্মকাণ্ডে বাতাস করেছে।
বিএনপির এই নেতা প্রশ্ন রাখেন, পিআর পদ্ধতিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কি কোনো জায়গা আছে? তাদের সাংবিধানিক অধিকার কি থাকবে না?
সর্বশেষ জরিপের তথ্যকে অবিশ্বাসযোগ্য আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, যেখানে দেশের ৫৬ শতাংশ মানুষই পিআর কি তা বোঝে না, সেখানে বলা হচ্ছে ৭০ শতাংশ মানুষ পিআর চায়। এটা বিভ্রান্তি ছড়ানোর শামিল।
সংবিধান সংস্কার প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, সংবিধান ছেলে খেলা নয়। ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমরা ছিনিমিনি খেলতে পারি না। সংবিধানকে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চলতে দিতে হবে।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, দলীয় স্বার্থে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে, তাদের বলবো জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না। নির্বাচন বিলম্বিত বা বানচালের চেষ্টা করা মানে অগণতান্ত্রিক শক্তিকে উত্থানের সুযোগ দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানও গণপরিষদের মাধ্যমে প্রণীত হয়েছিল, কিন্তু এক বছরের মধ্যে সংশোধন আনতে হয়েছিল। তাই নতুন সংবিধান প্রণয়ন করলেই তা স্থায়ী হয়ে যাবে, এমন ধারণা ভুল।
গণতান্ত্রিক চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, তর্ক-বিতর্ক হবে, বহুমত থাকবে, কিন্তু জাতীয় ইস্যুতে ঐক্যমত তৈরি করতে হবে। যাতে জনগণ বিজয়ী হয়, এদেশের মানুষ বিজয়ী হয়।
আলোচনায় তিনি গাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানান এবং জাতিসংঘকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনডিপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ্ আল হারুন (সোহেল)। বক্তব্য রাখেন সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদসহ এনডিপি নেতারা।