ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বন্দরে টিসিবির পন্য চুরির মামলার আসামি জাপা নেতা পেয়েছেন ওএমএসএর ডিলারশীপ

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Aug 24, 2025 ইং
বন্দরে টিসিবির পন্য চুরির মামলার আসামি জাপা নেতা ছবির ক্যাপশন: বন্দরে টিসিবির পন্য চুরির মামলার আসামি জাপা নেতা

বন্দর প্রতিনিধি: টিসিবির পন্য চুরির অভিযোগ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে ওএমএস এর ডিলারশীপ নিয়োগ। যা নিয়ে সমালোচনা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৬নং ওয়ার্ডে ইস্পাহানি বাজার এলাকায় ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জাহাঙ্গীর আলমকে। যে কিনা ইতোপূর্বে তার ভাই ২৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামসুজ্জোহার সাথে টিসিবির পন্য চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার বিরুদ্ধে মামলার আসামি হয়েছেন। এছাড়া তিনি ২৬নং ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির নেতা হয়েও এই সময়ে ওএমএস এর ডিলারশীপ ভাগিয়ে নেয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে ওএমএস ডিলার জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমি কোনো দলের সাথে সম্পৃক্ত নই। আর টিসিবি পন্যের যে অভিযোগ সেটা আমার ভাই শামসুজ্জোহার বিরুদ্ধে হয়েছে। এ ঘটনায় তার ভাই শামসুজ্জোহাকে কাউন্সিলর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘটনাটিও তিনি স্বীকার করে বলেন, পরবর্তীতে অভিযোগকারী নারী কাউন্সিলর সানিয়া সাউদ তার অভিযোগটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, আমার সাথে সাংবাদিক মাকসুদ হোসেন রয়েছে। তিনিই সব কিছু দেখাশোনা ও পরিচালনা করেন।
ওএমএস এর ডিলারশীপ নিয়োগ প্রক্রিয়ার শর্ত হিসেবে নিজের ডিলারশীপ অন্যকে হস্তান্তর করা অবৈধ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমি কাগজপত্র হস্তান্তর করিনি। আমার কাগজপত্র দিয়ে মাকসুদ পরিচালনা করছে সে আমার ডিলারশীপের পার্টনার। আর এই বিষয়ে খাদ্য অফিসার জুয়েল সাহেব সব ভাল বলতে পারবেন আপনি তার সাথে কথা বলেন।
এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের পরিদর্শক আমিনুর রহমান জুয়েল জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। ওএমএস ডিলার নিয়োগের ব্যাপারে আলাদা নিয়োগ কমিটি রয়েছে উনারা বিস্তারিত বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বাবুল জানান, যখন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তখন আমরা তদন্ত করে এসব অভিযোগ আমাদের সামনে আসেনি। কেউ অভিযোগও করেনি। যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ সহকারে অভিযোগ গুলো থাকলে আমরা সেটা জেলা প্রশাসকের কাছে উপস্থাপন করবো উনি ব্যবস্থা নিবেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ বন্দরে টিসিবির পন্য চুরির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় নারী কাউন্সিলর সানিয়া সাউদকে প্রকাশ্য মারধর করার  ঘটনা ঘটে। ঘটনায় নির্যাতিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর সানিয়া সাউদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার ( ৫ মার্চ) রাতে কাউন্সিলর সামছুজ্জোহা ও তার ভাই জাহাঙ্গীরসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি । এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে বন্দর থানার ২৬ নং ওয়ার্ডের ঢাকেশ্বরী বাজারে এ ঘটনাটি ঘটে।
নির্যাতিত মহিলা কাউন্সিলার সানিয়া সাউদ বন্দর থানার দক্ষিণ লক্ষনখোলা এলাকার আনিসুর রহমান টিটু মিয়ার স্ত্রী। অভিযুক্ত কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা বন্দর থানার রামনগর এলাকার মৃত সিদ্দিক মাস্টারের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বন্দর থানার ঢাকেশ্বরী এলাকায় প্রায় ১ হাজার ৯ পরিবারের জন্য টিসিবি আসে। পরে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর সানিয়া সাউদ খবর পেয়ে বিতরণ স্থলে আসে।
পরে সে টিসিবি মালামাল বুঝে নেওয়ার সময় ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা ও তার ভাই জাহাঙ্গীর একই এলাকার অটো রিপন সহ অজ্ঞাতনামা ১০-/১৫ জন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এক পর্যায়ে বাধা প্রদান করে।
এই ঘটনায় সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলার এর প্রতিবাদ করলে ওই সময় কাউন্সিলর শামসুজ্জোহাসহ উল্লেখিতরা প্রকাশ্যে মহিলা কাউন্সিলর কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ চড় থাপ্পড় মেরে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। ওই সময় তার সচিব নাঈম তাদেরকে বাধা প্রদান করলে উল্লেখিতরা তাকেও বেদম ভাবে পিটিয়ে নীলা ফুলা জখম করে।
এ ব্যাপারে সানিয়া সাউদ সাংবাদিকদের জানিয়ে ছিলেন, আমাকে জনগন ভোট দিয়ে দায়িত্ব দিয়েছে। জনগণের মাল আত্মসাৎ করার জন্য ভোট দেয়নি। টিসিবির পন্য বিতরণে প্রতিবারই সামছুজ্জোহা ডিলারের সাথে যোগসাজশে জনগণের হক আত্মসাৎ করে। সে কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পূর্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি চাল, ডাল, তেল ও ছোলা অন্যত্র সরিয়ে রেখেছে।
১ হাজার ৯ শত কার্ডধারী লোককে এগুলো দেয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশই সরিয়ে রেখেছে।
এতে প্রতিবাদ করতে গেলেই সামছুজ্জোহা দুই দফা হাত তুলেন মহিলা কাউন্সিলর সানিয়া সাউদের উপর। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ ৬/৮ টি চর থাপ্পড় দিয়েছে বলেও জানান।

নিউজটি আপডেট করেছেন : নারায়ণগঞ্জ আপডেট

কমেন্ট বক্স