সিলেটে সিপিবি নেতা এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, বাসদ নেতা বেলাল ও মঞ্জুসহ ব্যাটারি রিকশা আন্দোলনের ৩০ জন গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীর অবিলম্বে মুক্তি এবং বাসদ আহ্বায়ক আবু জাফর ও সদস্যসচিব প্রণব পালসহ নেতৃবৃন্দের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ বিকাল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্র্রীয় শহিদ মিনারে বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক কমরেড হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শিবনাথ চক্রবর্ত্তী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, সিপিবি জেলার সাধারণ সম্পাদক শাহীন, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ফোরামের সদস্য সেলিম মাহমুদ, এস এম কাদিও, সিপিবি নেতা ইকবাল হোসেন।
নেতৃব্ন্দৃ বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে সারা দেশে মানুষ বিপর্যস্ত ছিল। তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকার নানা অজুহাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে যখন-তখন পুলিশী অভিযান পরিচালনা করে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করতেন। গত ’২৪-এর ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হলেও সেই ফ্যাসিবাদী সরকারের মতোই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পুলিশবাহিনী ১ নভেম্বর বাসদ সিলেট জেলা কার্যালয়ে ব্লক রেইড দিয়ে পাঠচক্র চলাকালীন ২২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। এর আগের দিন সিপিবি নেতা এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমনকে তাঁর নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। এপর্যন্ত সিপিবি নেতা সুমন ও বাসদ নেতা বেলাল, মঞ্জুসহ ৩০ জন নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। এটি কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, তাদের অপরাধ তারা রিকশা শ্রমিকদের রুটিরুজির প্রশ্নে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। যে রিকশা শ্রমিকসহ বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমজীবী মানুষ ফ্যাসিবাদী হাসিনা উচ্ছেদের গণ-আন্দোলনে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছে এবং সর্বোচ্চ সংখ্যায় জীবন দিয়েছে। তারা অভ্যুত্থানের সময় আহতদের জীবন বাঁচাতে রিকশা ও ব্যাটারি চালিত রিকশাকে এ্যাম্বুলেন্স বানিয়েছিল। অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার আজ এই গরীব শ্রমজীবী মানুষের রুটিরুজির পথ বন্ধ করে দিয়েছে। সিলেটের পুলিশ প্রশাসন রিকশা চালকদের রাস্তায় নামতে দিচ্ছে না। প্রশাসন বড় ব্যবসায়ীদের মুনাফার স্বার্থে তাদের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আমদানি করা নতুন রিকশা নামানোর পাঁয়তারা করছে। বর্তমানে ব্যাটারি রিকশা চালকরা পেশা হারিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে অত্যন্ত দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন বিপন্ন, কৃষি অর্থনীতি ধ্বংস প্রায়, শত শত কারখানা বন্ধ, ফলে জীবিকার একমাত্র পথ রিকশা চালানো ছাড়া আর কোন পথ তাদের সামনে খোলা নেই।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে দমন-পীড়ন বন্ধ করে ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে নীতিমালা, রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে শহরে রিকশা চালানোর অনুমতি দেয়া এবং গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
নারায়ণগঞ্জ আপডেট